সত্যনারায়ণ পূজা পাঁচালী pdf | Satyanarayan Puja Panchali in Bengali, সত্যনারায়ণ পূজার পাঁচালী, সত্যনারায়ণ পাঁচালী পাঠ, সত্যনারায়ণ পাঁচালী গান, সত্যনারায়ণ পাঁচালী ও ব্রত কথা।
PDF Name | সত্যনারায়ণ পূজা পাঁচালী pdf |
No. of Pages | 5 |
PDF Size | 159 KB |
Language | Bengali |
Tags | Satyanarayan Puja |
PDF Category | Religion & Spirituality |
Published/Updated | March 7, 2022 |
Source / Credits | banglapdf.in |
Uploaded By | MyPdf |
DOWNLOAD সত্যনারায়ণ পূজা পাঁচালী pdf
আপনি কি সত্যনারায়ণ পূজা পাঁচালী pdf খুঁজছেন? তাহলে আপনি সঠিক স্থানে এসেছেন। এখানে আপনি সত্যনারায়ণ পাঁচালী পাঠ, সত্যনারায়ণ পাঁচালী গান, সত্যনারায়ণ পাঁচালী ও ব্রত কথা সম্পর্কিত সমস্ত কিছু তথ্য এক ক্লিকেই পেয়ে যাবেন।
DOWNLOAD: সত্যনারায়ণ পূজা পদ্ধতি PDF
সত্যনারায়ণ পূজার নিয়ম
এই ব্রতের কোন তিথি নক্ষত্রের নিষেধ নেই। যে কোন ব্যক্তি প্রদোষকালে এই ব্রত করতে পারেন। নারী-পুরুষ, কুমার-কুমারী নির্বিশেষে এই ব্রত করতে পারে। পূর্ণিমা বা সংক্রান্তি এই ব্রতের সঠিক দিন। উপবাস থেকে এই ব্রত করতে হয়।
সত্যনারায়ণ পূজার উপকরণ / সত্যনারায়ণ পূজার ফর্দ
ঘট, আমডালি, ডাব, কলা, সিঁদুর, গামছা, গঙ্গামাটি, ধান, বসার জন্য পিঁড়ে, বস্ত্র, তীরকাঠি, পান, সন্দেশ বা বাতাস, দুধ, ফুলের মালা, তিল, হরতকি, ফুল-দূর্বা ঘাস, বেলপাতা, তুলসীপাতা, ধুপ বা ধূপকাঠি, দধি, গব্যঘৃত, শিন্নির সামগ্রী, পাঁচ প্রকার ফল, ইত্যাদি।
সত্যনারায়ণ পূজা পাঁচালী pdf
রাম রাম প্রভু রাম কমল লোচন।
কৃপা কর নারায়ণ লইনু শরণ ।।
রাম ভাব রাম চিন্ত রাম কর সার।
যে রাম শরণে হয় ভবসিন্ধ পার ।।
রাম রাম বল ভাই বারেক এবার।
মানুষ্য দুঃসহ জন্ম না হইবে আর ।।
বন্দিব শ্রীগুরুদেব কমল লোচন।
জ্ঞানদাতা মহাপ্রভু মুক্তির কারণ ।।
গোলকধামেতে যার সদায় বসতি।
আনন্দে শরণ লই দেবী ভগবতী ।।
ব্রহ্ম বিষ্ণু হর বন্দ করিয়া যতন।
হংস ও গরুড় আর বৃষভ বাহন ।।
বন্দ লক্ষী সরস্বতী ভুবন ঈশ্বরী।
ভক্তিভাবে করজোড়ে সাবিত্রী সুন্দরী ।।
গণেশাদি দেবগন যত স্বর্গবাসী।
বন্দিব অনন্ত আদি পাতাল নিবাসী ।।
যোগী ঋষি মুনি আর সাধু যত জন।
ভূমিতে পড়িয়া বন্দি সবার চরণ ।।
ব্রাহ্মণ ক্ষত্রিয় বৈশ্য কিবা শূদ্র জাতি।
শ্রীনাথ চরণে যেবা করয়ে ভক্তি।।
গুরুদেব বিপ্রগনে দন্ডবৎ করি।
কহিব সত্যের কথা অমৃত লহরী ।।
ভক্তিতে সত্যের কথা শুনে যেবা জন।
চতুবর্গ ফল তারে দেন নারায়ণ ।।
সত্যের মহিমা এই পূরণের সার।
সংক্ষেপে কহিব কিছু করিয়া পয়ার ।।
করিলেন নারায়ন কলির মোচন।
যুধিষ্ঠির নরপতি জিজ্ঞাসে তখন ।।
সত্যক্রেতা দ্বাপরের জানি যুগ ধর্ম্ম।
কহ কলি যুগে লোকে করিবে কি কর্ম্ম ।।
শুনিয়া রাজার কথা কহে নারায়ণ।
শুন রাজা ধর্ম্মপুত্র কলির লক্ষণ ।।
সত্যে পূর্ন ধর্ম্ম ছিল ক্রেতাতে ত্রিপাদ।
অর্দ্ধ ধর্ম্ম দ্বাপরেতে অর্দ্ধেক আপদ ।।
কলিযুগে তিন পাদ অধর্ম্ম ব্যাপিবে।
একপাদ ধর্ম্ম মাত্র ক্ষিতিতে রহিবে ।।
যখন হইবে কলি প্রবত্ত সংসারে।
ধর্ম্ম হইবে সঙ্কুচিত তপ যাবে দূরে ।।
সত্যের না রবে লেশ শস্যহীন ক্ষিতি।
অস্ত্রধারী বিপ্র হবে কপট নৃপতি ।।
স্ত্রীবেশ হইবে লোক নারীও চপলা।
নিজপতি নিন্দিবেক যতেক অবলা ।।
সাধুলোক দুঃখী হবে দুর্জ্জন প্রবল।
কলির আরম্ভে মাত্র হবে এ সকল ।।
কাম ক্রোধ লোভ আদি সদা যুক্ত হবে।
শ্রীবাক্যে বশ হয়ে ভাইকে ত্যজিবে ।।
জন্মদাতা মাতাপিতা কিবা গুরুজন।
সবারে কুবাক্য কবে গুণী স্ত্রীবাচন ।।
নিজধর্ম্মে যত সবে ত্যজিবে কলিতে।
জীবনে নৃপতি হবে কলির ক্ষিতিতে ।।
এই যে ব্রাহ্মণ সব আমার পূজিত।
যবনেও দিলে দেন লিবে নিশ্চিত ।।
শিষ্যে না মানিবে গুরু ধনমত্ত হ’য়ে।
সাধুরে নিন্দিবে দুষ্ট নির্ধন দেখিয়ে ।।
তীর্থ যজ্ঞ পুণ্যে ক্রিয়া যাইবে সকল।
শুনে রাজা যুধিষ্ঠির কলিযুগ ফল ।।
অযুত বৎসর পর কিছু না রহিবে।
কলির প্রতাপ ঘোর যখন হইবে ।।
সত্যনারায়ণ পাঁচালী Lyrics
ধর্ম্মধৰ্ম্ম জ্ঞান করো না রহিবে আর।
ম্লেচ্ছ হবে লোক সবে পৃথিবী মাঝার ।।
একথা শুনিয়া পুনঃ জিজ্ঞাসে রাজন।
কহ প্রভু নারায়ণ পতিত পাবন ।।
অযুত বৎসর মধ্যে কি আছে উপায়।
তরিবারে ঘোর কলিকালে যমদায় ।।
কৃষ্ণ বলে শুন রাজা ঘোর কলিকালে।
রহিব অযুত বর্য আমি ক্ষিতিতলে ।।
এখন যে মোরে তুমি দেখ বিদ্যমান।
কলিযুগে শালগ্রাম রূপে অধিষ্ঠান ।।
তুলসী জাহ্নবী আর ক্ষেত্র জগন্নাথে।
প্রয়াগ মথুরা আদি থাকিব তাহাতে ।।
অযুত বৎসর পরে ত্যজিব এ ভরে।
শিলা ক্ষেত্র জগন্নাথ কিছু নাহি রবে ।।
পতিত পাবনী গঙ্গা হবে অন্তর্ধান।
তদন্তরে গ্রাম্য দেব করিবে পয়ান ।।
শুনহ কলির জীব তরণ উপায়।
কদাচিত ভগীরথ দর্শন পায় ।।
কোটি ব্রহ্মবধ আদি পাপে মুক্ত হ’য়ে।
পুষ্পরথে চড়ি যায় শমন জিনিয়ে ।।
গয়াশিরে বিষ্ণুপদে কদাচিত নরে।
সামীপ্য প্রমাণেতে পিন্ডদান করে ।।
সর্ব্বপাপে মুক্ত হয়ে তার পিতৃগণ।
দিব্যরথে চড়ি যায় বৈকুন্ঠ ভবন ।।
প্রয়াগেতে যেইজন করায়ে মুন্ডন।
পূর্ব্বর্জিত পাপ হয়ত খন্ডন ।।
কাশীর মাহাত্ম্য কিবা করিব নির্নয়।
কাশী দর্শনে জেনো মহাপুণ্য হয় ।।
বিশ্বেশ্বর যারে দয়া করে কদাচিত।
কাশী দরশনে সে পাইবে নিশ্চিত ।।
জগন্নাথ ক্ষেত্র কথা শুনহ রাজন।
ইন্দ্রপুরী মাঝে সাক্ষাৎ নারায়ন ।।
বলরাম সুভদ্রা আর দারুময় হরি।
আর যে অক্ষয় বট মনোহর পুরী ।।
মণি কোঠা মধ্যে দেব সাক্ষাৎ নারায়ন।
দেখিলে মোচন হয় ভবের বন্ধন ।।
রন্ধন করয়ে লক্ষ্মী স্বয়ং ভুঞ্জে হরি।
তাহার মাহাত্ম্য কিছু কহিতে না পারি ।।
কলিকালে জগন্নাথ উড়িষ্যাতে সাক্ষাৎ
বলরাম সুভদ্রা সহিত।
রত্নসিংহাসনোপবি দারুব্রহ্ময় হরি
মণিকোঠা মাঝে বিরাজিত ।।
লক্ষী করে যে রন্ধন ভুঞ্জে জনার্দ্দন
অন্নব্রহ্ম সেখানে প্রকাশ।
কুকুরের মুখ হতে পড়ে যদি কদাচিত
ব্রহ্মা টরে করে অভিলাষ ।।
কিবা ক্ষেত্র জগন্নাথ বাজারে বিকায় ভাত
ক্ষীররস পরমান্ন পিঠা।
লুচি পুরি মণ্ড খাজা পায়স রসের গজা
কে বর্ণিবে কতশত মিঠা।।
স্মানশৌচ কিছু নাই প্রাপ্তিমাত্র সুখে খায়
খেয়ে পরে মাথে মুছে হাত ।
চণ্ডাল ব্রাহ্মণ মুখে দিতেছে পরম সুখে
খেয়ে বলে জয় জগন্নাথ।।
সিংহদ্বারে বেত্র খায় সর্ব্বপাপ দূরে যায়
ইন্দ্রদেব তারে বাঞ্চা করে।
কবে আমি ক্ষেত্র যাব বেতের প্রহার খাব
নিরবধি ভাবে পুরন্দরে ।।
জগন্নাথ চাঁদ মুখ দেখিলে পরম সুখ
ক্ষেত্রে যেবা প্রসাদ খাইলে।
শুন রাজা যুধিষ্ঠির কলির ঘোর তিমির
যমদ্বার সেই এড়াইলে ।।
আর এক ধর্ম্ম আছে কহিব তোমার কাছে
মহাবিদ্যা অগমের মত
গুরুপাদ প্রিয় করি যেভাবে ভক্তি করি
ঘোর কলি তার তৃণবত।।
এখন সাক্ষাতে মোরে পাও তুমি দেখিবারে
কলিকালে মম হরিনাম ।
হরে কৃষ্ণ হরে রাম সদা জপে যে এনাম
তাহার বসতি মোর ধাম।।
শ্রীনাথ চরণে মন দৃঢ় করে যেই জন
কলি তারে কি করিতে পারে।
শুন রাজা যুধিষ্ঠির বলি বিবরন।
কলিকলে যে উপায়ে তরিবেক জন।।
অনন্ত যে মূর্তি অনন্ত যে নাম।
সর্ব্বভূতে হই আমি সকাল নিষ্কাম ।।
তার মধ্যে এক নাম সত্যনারায়ণ।
কলিযুগে প্রকাশিত শুনহে রাজন ।।
সত্যনারায়ণ নাম প্রকাশ করিয়ে।
পৃথিবীতে যাব আমি কল্পতরু হয়ে ।।
দুঃখী বা দরিদ্রলোক উদ্বেগ পীড়িত।
সত্যদেব পূজা যদি করে কদাচিত ।।
যে যেই কামনা করে সেই সিদ্ধি হবে।
বাঞ্চা কল্পতরু হবে কলিকালে ভবে ।।
ব্রাহ্মণ ক্ষত্রিয় বৈশ্য শূদ্র চারিজাতি।
ভালমন্দ ছোট বড় কিবা রাজ্যপতি ।।
স্বজাতীয় জন কিবা উত্তম অধম।
ভক্তিতে করিবে যেবা সাধ্য অনুক্রম ।।
সোয়া সের আটা দিবে গুড় তার সম।
সোয়া সের দুগ্দ্ধ দিবে তাহার নিয়ম ।।
সোয়া কুড়ি রম্ভা দিয়া করিবে রচনা।
সোয়া পরিমাণে দিবে উপহার নানা ।।
চালের প্রলেপ দিবে ভক্তি করিয়া।
পূর্নঘট দিবে স্থাপন করিয়া ।।
যে আমার এই মূর্তি মনে ধ্যান করি।
ভক্তি করি নিবেদিবে মন স্থির করি ।।
নিমন্ত্ৰীয়া আসিবেক জট জ্ঞাতিগণ।
ইস্ট মিত্র আদি করি যত বন্ধুজন ।।
পয়ার প্রবন্ধে করি সত্যের কথন।
যেইরূপে সত্যদেব দিল দর্শন।।
পশ্চাতে নৈবেদ্য যত একত্র করিয়া।
ক্রমে ক্রমে সকলের দিবেক বাটিয়া।
মনেতে দ্বিজ জীবনে কি কাজ।
আত্মঘাতী হব আমি জাহ্নবীর মাঝ ।।
ব্রহ্মবধ দিব আমি গোবিন্দর পরে।
বিপ্র বংশে জন্মাইয়া দুঃখ দিল মোরে ।।
ব্রহ্মবধ দেখি হ্রী ত্বরতি গমনে।
কপট ব্রাহ্মণ বেশে আসিল সেখানে ।।
ব্রাহ্মণেরে জিজ্ঞাসিল মধুর বচনে।
কিবা চিন্তা কর তুমি কহ মোর স্থানে ।।
ব্রাহ্মণেরে জিজ্ঞাসিল মধুর বচনে।
কিবা চিন্তা কর তুমি কহ মোর স্থানে ।।
ব্রাহ্মণ বলয়ে দেব কহিলে কি হবে।
খানিক দাড়াও যদি এখনি দেখিবে ।।
জন্মাবধি দুঃখী আমি শুনহ গোসাঁই।
ব্রাহ্মণী বিনা যে মোর আর কেহ নাই ।।
তাহারে প্রসন্ন আমি করিতে না পারি।
এমন দরিদ্র মোর করিল শ্রীহরি ।।
আর দুঃখ শরীরে না সহে কদাচিত।
গঙ্গাতে ডুবিয়া আমি মরিব নিশ্চিত ।।
ব্রাহ্মণেরে কথা শুনি বলে নারায়ণ।
আমার বচন তুমি শুনহ ব্রাহ্মণ ।।
আত্মঘাতী গতিহীন সংসার ভিতর।
অনুচিত কর্ম নাহি কর দ্বিজবর ।।
সত্যদেব নারায়ণ ত্রিদশ ঈশ্বর।
তাহারে সেবিলে পাবে মনোমত বর ।।
বিপ্র বলে বল দেব সব বিবরণ।
কোন দেব হয় প্রভু সত্যনারায়ণ ।।
পূজার বিধান কিবা কিবা রূপ ধ্যান।
কিবা তন্ত্র কিবা মন্ত্র কিবা শাস্ত্রজ্ঞান ।।
ধনহীন দুঃখী আমি দরিদ্র সংসারে।
বিনা ধনে কিবা রূপে পূজিব তাহারে ।।
গোবিন্দ বলেন দ্বিজ শুনহ বচন।
সেবা কর ভক্তিভাবে সত্যনারায়ণ ।।
আটা কলা দুগ্দ্ধ গুড় সোয়া পরিমাণে।
সত্যপূজা কর তুমি ভক্তি করি মনে ।।
কহিতে কহিতে প্রভু নিজমূর্তি ধরে।
অনুগ্রহ করি দেখা দিল ব্রাহ্মণেরে ।।
চতুর্ভুজ শঙ্খ চক্র গদা পদ্মধারী।
পীতবাস মৃদুহাস জগমনোহারী ।।
কন্ঠেতে কৌস্তভ হরি গরুড় বাহন।
পদনখে শত চাঁদ মেঘের বরণ ।।
সুনীল কমল যিনি শোভিত নয়ন।
আকর্ণ ব্যাপৃত ধনু ভুরুর গঠন ।।
দেব ঋষি সিদ্ধ মুনিগন স্তুতি করে।
বামে রানী লক্ষ্মীদেবী শোভা নিরন্তরে ।।
এই মূর্তি ধ্যান করি পূজা কর তুমি।
মনের বাঞ্চিত বর সব দিব আমি ।।
আনন্দে পুর্নিত বিপ্র দন্ডবৎ হয়।
ভক্তিতে হরিকে তুষ্ট করে অতিশয় ।।
অন্তর্ধান হইল প্রভু বৈকুন্ঠ ঈশ্বর।
স্বপ্নপ্রায় দেখি বিপ্র বিস্মিত অন্তর ।।
নগরেতে গেল বিপ্র ভিক্ষা করিবারে।
পাইল প্রচুর ভিক্ষা প্রতি ঘরে ঘরে ।।
যত কিছু পেয়েছিল একত্র করিয়া।
য্থায় ব্রাহ্মণী তথায় উত্তরিল গিয়া ।।
অনেক দেখিয়া দ্রব্য পুছে দ্বিজসুতা ।
কহ নাথ আজ এত ভিক্ষা পেলে কোথা
বৃত্তান্ত কহে ব্রাহ্মণীর স্থানে।
দুইজনে ভকরীভাবে পূজে নারায়নে ।।
তদবিধ ব্রাহ্মণেরে ঐশ্বর্য্য অপার।
ধনেজনে পুত্র-পৌত্রে রাজ্যে অধিকার ।।
মাসে মাসে সত্যদেব করয়ে ভক্তি।
দরিদ্র ব্রাহ্মণ প্রতি তুষ্ট লক্ষীপতি ।।
একদিন বিপ্র নানাবিধ উপহারে।
মনের আনন্দে সত্যদেব পূজা করে ।।
আটা কলা দুগ্দ্ধ গুড় রচনা করিয়া।
সত্যের মাহাত্ম্যে পূজে হর্ষিত হইয়া ।।
হেনকালে এক দুঃখী কাঠুরিয়া ছিল।
কাষ্ঠভাবে লয়ে মাথে সেই স্থানে গেল ।।
কিবা পূজা করে তাহা জানিবার তরে।
কাষ্ঠভাবে ভুমে রাখি নিরীক্ষণ করে ।।
পুস্তক হইতে পাঠ পূজা সাঙ্গ করি।
প্রসাদ লইল স্বে দন্ডবৎ করি ।।
তাহা দেখি কাঠুরিয়া ভক্তিযুক্ত মন।
প্রসাদ খাইল মাগি করিয়া যতন ।।
মনে মনে কাঠুরিয়া কামনা করিল।
দরিদ্র করিয়া প্রভু আমারে সৃজিল ।।
যাউক আমার যত ক্লেশ-দুঃখ দূরে।
এইরূপে সেবা আমি করিব তোমারে।।
দন্ডবৎ হয়ে তবে বিদায় লইল।
কাষ্ঠভাব লয়ে মাথে নগরেতে গেল ।।
আর দিন হতে কাঠ দ্বিগুন বিকায় ।
সত্যনারায়ণ প্রভু স্মরে সর্বদায় ।।
সে অবধি তার প্রতি সদয় শ্রীহরি।
নানাবিধ ধনেজনে মনোহর পুরী ।।
সত্যনারায়ণ পূজা করে মাসে মাসে।
ওই চরণ মাগে সাদা দীনহীন দাসে ।।
দৈবযোগে এক সাধু বাণিজ্যে চলিছে।
নদীতীরে কাঠুরিয়া পূজা দেখিবার ।।
দেখিয়া পূজার রীতি ভক্তি উপজিল।
মনে মনে সদাগর মানস করিল ।।
অদৈন্য করিয়া মোরে ধন আদি দিলা।
কিবা অপরাধে মোরে সন্তানে বঞ্চিলা ।।
পুত্র কিংবা কন্যা যাহা হউক আমার।
লক্ষমুদ্রা দিয়ে পূজা করিব তোমার ।।
নানাবিধ উপচারে পূজিব শ্রীহরি।
মানসিক করিয়া সাধু দন্ডবৎ করি ।।
নৌকাতে চড়িল গিয়া লইয়া প্রসাদ।
সর্বদা বলিছে প্রভু ক্ষম অপরাধ ।।
সেইদিন উপস্থিত আপন নগরে।
লীলাবতী পত্নী তার মনোস্কাম করে ।।
ষোড়শী বয়সী তবে হল গর্ভবতী।
দশমাসে এক কন্যা হইল সন্ততি ।।
জন্মারম্ভ করে সাধু আনন্দে সুদিনে।
কলাবতী নাম রাখে সাধ করি মনে।।
দশবর্ষ বয়ক্রম কন্যার হইল।
বিবাহ দিবার তরে মনেতে ভাবিল ।।
হারাপতি সদাগর তাহার নন্দন।
শঙ্খপতি নাম তার বিদিত ভুবন।।
কূলে শীলে বণিকের বংশ শিরোমনি।
ঘটক পাঠিয়ে দিল মনে অনুমানি ।।
ত্বরিতে সম্বন্ধ তথা করে নিরুপন।
বিবাহ দিবস শোভা হইল তখন ।।
শুভক্ষনে ধনপতি মহোৎসব করি।
দিলেন কন্যার বিভা মঙ্গল আচরি ।।
শঙ্খপতি স্থানে কন্যা করে সম্প্রদান।
কূলেশীলে রূপেগুনে বড়ই প্রধান।।
ধনপতি সদাগর পুত্রহীন ছিল।
জামাতাকে গৃহকার্য্য সব সমর্পিল ।।
এইরূপে সদাগর আছে কতদিন।
জামাতাও বাণিজ্যেতে হইল প্রবীণ ।।
একদিন জামাতাকে কহে ধনপতি।
অনেক দিবস ঘরে করিয়া বসতি ।।
গৃহে থাকা আর নহে উচিত এখন।
বিদেশেতে চল ধৌহে বাণিজ্য কারণ ।।
নৌকা পূর্ন ভরা ভরি দেখি শুভক্ষণ।
যাত্রা করি বাণিজ্যেতে করিল গমন ।।
দক্ষিণ শহরে সাধু জামাতা সহিত।
বিক্রমকেশের দেশে হ’ল উপস্থিত।।
জিনিস তুলিয়া সেই শহর উপরে।
শশুর জামাতা দোঁহে বিকিকিনি করে ।।
তার মধ্যে শুন সত্যদেবের কথন।
যেরূপে সাধুর তথা হলে বিড়ম্বন ।।
পূর্বেতে সন্তান লাগি মানস করিয়া।
না পুজিল সত্যদেব মনে পাসরিয়া ।।
সেই অপরাধ হেতু ক্রুদ্ধ নারায়ান।
আচম্বিতে রাজগৃহে চুরি হয় ধন ।।
কোতোয়াল আনি রাজা বলিল তর্জিয়া।
যথা পাও চোর এবে আনহ ধরিয়া ।।
সাতদিন মধ্যে যদি নাহি আনো চোর।
সবংশে কাটিব আমি যত আছে তোর ।।
তদবিধ কোতোয়ালে ফিরিছে নগরে।
নানাবেশে ফিরে তারা প্রতি ঘরে ঘরে ।।
দৈবযোগে কণ্ঠমালা বিকায় নগরে।
সাধুর জামাতা তাহা কিনিল সত্বরে ।।
গলায় দিলেন হার হর্ষিত হইয়া।
হরকার কোতোয়ালে দেখি কহে গিয়া ।।
শুনিয়া সকল কথা কোতোয়ালে জ্ঞাত।
দুজনে বান্ধিয়া নেয় রাজার সাক্ষাৎ ।।
শ্বশুর জামাতা দোঁহে বিচার না করি।
রাজাজ্ঞা হয় নিতে বন্দীশালা পুরী ।।
চোরের যতেক ধন আনিল ভাণ্ডারে।
সত্যদেব সর্বনাশ করিল সাধুরে ।।
এইরূপে ভুঞ্জিয়াছে দ্বাদশ বৎসর।
দুঃখের সাগর মাঝে ডুবি সদাগর ।।
হেথায় সাধুর গৃহ অগ্নিতে পুড়িল।
ধন-রত্ন আদি করি সর্বনাশ হল ।।
চোর কত লয়ে গেল নানাবিধ ধন।
আর কত দ্রব্য তাহা কে করে গণন ।।
কন্যা সঙ্গে করি ভিক্ষা মাগি খায় ধনী।
এইমত দুঃখ পায় সাধুর রমণী ।।
ইস্ট মিত্র বন্ধু কেহ জিজ্ঞাসা না করে।
মায়ে-ঝিয়ে ভিক্ষা করে নগরে নগরে ।।
একদিন সাধুর স্ত্রী ভিক্ষাতে বেড়ায়।
দেখে লোকে সত্যপূজা করিছে তথায় ।।
সেই সব লোক সত্যপূজা করিছে তথায় ।।
সেই সব লোক সঙ্গে দুহিতা সহিত।
পূজার নিকট গিয়া হল উপনীত ।।
কোন দেব পূজা করে দেখে দাঁড়াইয়া।
আটা কলা দুগ্দ্ধ গুড় রচনা করিয়া ।।
পাঁচালী পড়িয়া পরে পূজা সাঙ্গ করি।
প্রসাদ লইল সবে দন্ডবৎ করি ।।
সাধুর রমণী দেখি পূজার বিধান।
প্রসাদ মাগিয়া খায় করি ব্রহ্মজ্ঞান ।।
কামনা করিয়া সতী মনে সাধ করি।
আসুক জামাতা সহ স্বামী নিজপুরী ।।
দুঃখ দূর কর মোর সত্যনারায়ণ।
সাধ্যমত আমি তব পুঁজিব চরণ ।।
এমত করিব সেবা আমি অভাগিনী।
পুনর্ব্বার দয়া করা সত্য গুনমনি ।।
মানত করিয়া ধনি নিজ গৃহে গেল।
সত্যনারায়ণ তাহে প্রসন্ন হইল ।।
পূর্ব্বের স্থাপিত ধন হারাইয়াছিল।
ক্রমে ক্রমে সেই ধন পাইতে লাগিল ।।
আটা কলা দুগ্দ্ধ গুড় করিয়া বচন।
নিরবধি সেবে বামা সত্যনারায়ণ ।।
কারাগার মধ্যে রহে শ্বশুর জামাতা।
যেমতে মোচন হল শুন তার কথা ।।
মহাক্রোধে সত্যদেব বিস্তর গর্জিয়া।
নিদ্রাতে রাজারে স্বপ্ন দেখাইল গিয়া।।
দুই সাধু কারাগারে রাখ কি কারণ।
আমার পরম ভক্ত সাধু দুইজন ।।
চোর নহে সাধু তারা করহ মোচন।
যত ধন নিলা তাহা দেও এইক্ষণ ।।
নহিলে করিব তোর সর্ব্বনাশ আমি।
নিশ্চয় জানিও নাহি তুচ্ছ কর তুমি ।।
একথা বলিয়া প্রভু অন্তর্ধান হল।
চমৎকৃত মহারাজ তখনি জাগিল ।।
প্রভাতে উঠিয়া রাজা বসে সিংহাসনে।
স্বপ্ন বিবরণ কহে পাত্রমিত্র স্থানে ।।
কারাগার হতে হয় সাধু আনাইয়া।
দোঁহার করায় কৃচ্ছ নিগড় কাটিয়া ।।
স্নান করাইয়া দিব্য বস্ত্র অলংকার।
দিল নিজ কন্ঠ হতে মনিমুক্তা হার ।।
যতকিছু অপরাধ ক্ষমা কর মোর।
না বুঝিয়া মিছে দোঁহে বলিয়াছি চোর ।।
প্রসাদ লইতে ছিল সাধুর কন্যায়।
হস্ত হতে ভুমে ফেলি দৌড়ে ঘাটে যায় ।।
তাহা দেখি সত্যদেব ক্রুদ্ধ অতিশয়।
আমার প্রসাদ ফেলে মনে নাহি ভয় ।।
সাধুমাত্র উঠেছিল জামাতা নৌকাতে।
ঘাটতে ডুবিল নৌকা জামাতা নৌকাতে।
ঘাটেতে ডুবিল নৌকা জামাতা সহিতে ।।
ফিরিয়া দেখিল সাধু একি আচম্বিত।
দীনহীন দাস কহে ভাবি সত্য নাম।
শুকনাতে ভরা ডোবে বিধি যার বাম ।।
সুতরাং, আর অপেক্ষা না করে নিজের দেওয়া লিংক থেকে টি Download করুন।
DOWNLOAD: শ্রী শ্রী লক্ষ্মী দেবীর পাঁচালী PDF
You can download the সত্যনারায়ণ পূজা পাঁচালী pdf the link given below:
Report This: If you have any problem with this pdf such as broken link/copyright material please feel free to contact us.
Pingback: [pdf] মঙ্গলচন্ডী পূজা পদ্ধতি pdf | Mangal Chandi Puja Vidhi in Bengali